দেশ ভেদে অদ্ভুত কিছু আইন!
অমিয় দত্ত ভৌমিক:
আইন নাগরিক জীবন, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সমাজের
ভিত্তি নির্মাণের হাতিয়ার। ৩৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল লিখেছিলেন, ‘আইনের শাসন যে কোন
ব্যক্তিশা
সনের চেয়ে ভাল’।
আইনের চোখে সবাই সমান হলেও দেশ ভেদে আইনের
ভিন্নতা দেখা যায়। দেশ-বিদেশে এমন কিছু আইন আছে যেগুলো অদ্ভুত বলে শনাক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
যেমন ধরা যাক হংকংয়ের কথা। সেখানে স্ত্রী পরকীয়া
করলে স্বামী তাকে খুন করতে পারবে। তবে শর্ত একটাই,
খুন করতে হবে খালি হাতে।
জাপানে কোন মেয়েকে প্রণয়ের প্রস্তাব দিলে
আইন অনুসারে মেয়েটি না বলতে পারবে না। থাইল্যান্ডে ৩০ বছরের বেশি বয়সি অবিবাহিত নারী দেশের সম্পত্তি
হিসেবে গণ্য হবে।
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় নতুন দেশ সামোয়াতে
নিজের বৌয়ের জন্মদিন ভুলে যাওয়াটাই বে-আইনি।
পশুপালন পাশ্চাত্য-প্রাচ্যে খুব চলে। গৃহপালিত পশুরু নামকরণও
হয়। এর তালিকায় শুকরও রয়েছে। কিন্তু ফ্রান্সে শুকরের
নাম নেপোলিয়ান রাখা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় মেয়ের বাসরঘরে
তার মায়ের (বেচে থাকলে) উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো চলে নিজস্ব
আইন, রীতিপদ্ধতিতে। এক রাজ্যের আইন অন্য রাজ্যে মানার প্রয়োজন নেই। আর নিজস্ব আইন থাকায় কেন্দ্রের আইনও তোয়াক্কা
করে না লোকে। কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের রয়েছে নিজস্ব এক অদ্ভুত আইন। তা হচ্ছে- যৌক্তিক কোনো কারণ না দেখিয়ে বৃষ্টির
পানি সংগ্রহ করা যাবে না। রাজ্যের আইন এ কাজকে চুরির সামিল বলেই মনে করে। এবং এজন্য যে সাজা
তা প্রতারণা বা ছিনতাইয়ের সাজার সমান।
ইন্ডিয়ানায় রোববারে গাড়ি বিক্রি করা আইনত
দণ্ডনীয়। আরাকানসায় মাসে দুইবার বউ পেটালেই দণ্ড। তবে একবার বৌ পেটালে আইনে আটকাবে না। আর নেভাদায় বৌ পেটানো ধরা পড়লে আইন অনুসারে
তাকে আধ ঘন্টা বেঁধে রাখা হবে। তার বুকে ‘বউ পিটিয়ে’ লেখা পোস্টার লাগিয়ে দেওয়া হবে।
আরিজোনায় সাবান চুরি করে ধরা পড়লে তার শাস্তি
ওই সাবান দিয়েই নিজেকে ধুতে থাকবে যতক্ষণ না সাবান পুরো শেষ হয়।
শীতে তুষার জমে যায় রাস্তা-ঘাটে, আঙ্গিনায়। আর সেই তুষারে নেমে
জমাট তুষার তুলে গোল্লা বানিয়ে ছুড়ে মারা একটি নির্দোষ খেলা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের কথা ভিন্ন। এখানে আইন করে বলা
হয়েছে, শীতকালে কোনো শিশু জমে থাকা তুষার দিয়ে বল বানিয়ে গাছের দিকে নিক্ষেপ করতে পারবে
না।
আর দেশটির দক্ষিণ প্রশান্তমহাসাগরীয় এলাকার
ভুখন্ড গুয়ামের আইন হচ্ছে- কোনো কুমারি মেয়ে বিয়ে করতে পারবে না। এখানে কিছু পেশাদার
পুরুষ আছে যারা অর্থের বিনিময়ে মেয়েদের কুমারিত্ব মোচন করে। পরে তাদের দেওয়া সনদ দেখিয়ে মেয়েদের বিয়ে
হয়।